ডাবলিনের ডায়েরী – ১৩ (১৪ এপ্রিল ২০০৯)

সকাল থেকে আকাশ খুব মেঘলা। শীতটাও চেপে বসে আছে বেশ করে। সামার আগত, কিন্তু সেটা কেবল ক্যালেন্ডারের পাতায়। প্রকৃতিতে সেরকম লক্ষন আপাতত দেখা যাচ্ছে না। চার দিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কথা শুনি। অথচ এ দ্বীপদেশের রাজধানী শহরে আমি অবেলায় শীতের দাপটে কেঁপে উঠছি।

আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। ব্লগ এবং ফেইসবুকের কল্যানে চারদিকের সাজ সাজ রবটা বেশ দেখতে পাচ্ছি। শুনেছি এখানেও নাকি অনুষ্ঠান হয়। ডাবলিনে বাংলাদেশী ছাত্রের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ডিসিইউ তথা ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটিতে। তারা স্বাধীনতা দিবস, বৈশাখী মেলা ইত্যাদি করে থাকে। তবে গত দেড় বছরেও তাদের সাথে ঠিক মেশা হয়ে ওঠেনি। Continue reading “ডাবলিনের ডায়েরী – ১৩ (১৪ এপ্রিল ২০০৯)”

ডাবলিনের ডায়েরী – ১৩ (১৪ এপ্রিল ২০০৯)

ডাবলিনের ডায়েরী – ১২ (৪ মার্চ ২০০৯)

ডায়েরী লিখতে ইচ্ছে করে না এখন। কেন যেন ইচ্ছে গুলো দিনদিন মরে যাচ্ছে। আসলে ইচ্ছেরাতো তুচ্ছ; যেভাবে নির্বিচারে মানুষ মরে যেতে দেখলাম, তাতে নিজের বেঁচে থাকাটাও এখন অবাক করা বিষয় মনে হয়। গত কিছুদিনের বর্ননা যদি ডায়েরীতে তুলি, তাহলে সেটা বছর বিশেক পরে মানুষের কাছে রুপ কথা মনে হবে। আমাদের প্রজন্ম যেমন একাত্তরের ভয়াবহতাকে কেবল সেলুলয়েডের পর্দায় দেখে, তেমনই আগামী প্রজন্ম ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারী মাসের গল্প বই-ডায়েরী থেকে পড়বে।

শুরুটা ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারী তারিখে। ব্লগ এবং ফেইসবুকে বিচ্ছিন্ন সংবাদ শুনতে শুরু করলাম। ঠিক কি হয়েছে বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এলোমেলো পোস্টগুলো থেকে যখন বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি আসলে কি হয়েছে, তখন ফেইসবুকে এক বন্ধুর দেয়া বিস্তারিত পোস্টের মাধ্যমে খানিকটা অবগত হলাম। তবে ভয়াবহতার বিষয়টা সামান্যতমও আঁচ করতে পারিনি। Continue reading “ডাবলিনের ডায়েরী – ১২ (৪ মার্চ ২০০৯)”

ডাবলিনের ডায়েরী – ১২ (৪ মার্চ ২০০৯)

ডাবলিনের ডায়েরী – ১১ (১৭ ফেব্রুয়ারী ২০০৯)

পুরো ডাবলিন শহর ঘুমিয়ে আছে। রাস্তায় কালে ভাদ্রে দু’একটা গাড়ি হুস করে বের হয়ে যাচ্ছে। ঘড়িতে রাত প্রায় এগারোটা। বঙ্গদেশে এ সময় আসলে রাতই না, কিন্তু এখানে অনেক রাত। যে দেশে সন্ধ্যা সাতটার আগে মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়, রাত আটটার মধ্যে রাস্তাগুলো ধুয়ে মিউনিসিপেলিটির ট্রাকগুলো ফিরতে শুরু করে, সেই দেশে এগারোটা মানে গভীররাত বৈকি!

আমি ক্লান্ত পায়ে বাস থেকে নামি। প্রায় সোয়া দশটা পর্যন্ত থিসিসের কাজ করে বাসায় ফিরেছি। এখন আর রান্না করতে ইচ্ছে করছে না। বিষন্ন মন আর অবসন্ন শরীর নিয়ে ধীরেধীরে হেটে টেক এ্যাওয়ে চাইনিজ ‘ফরচুন রেস্টুরেন্ট’-এর দিকে এগিয়ে যাই। আশেপাশের সব দোকান অনেক আগেই বন্ধ কয়ে গিয়েছে। শুধু এটা খোলা। সন্ধ্যা সাতটায় এরা দোকান খোলে, বন্ধ করে রাত একটায়। কিছু মানুষ হয়তো সব দেশেই থাকে যারা নিশাচর। তাদের জন্য এই ‘ফরচুন’ রেস্টুরেন্টটা সত্যিই ফরচুনের লক্ষন! সময়-অসময়ে খাবার পাবার নির্ভরযোগ্য সংস্থান। দোকানে আর কোন কাস্টোমার ছিলনা। আর্ডার দেয়ার প্রায় সাথে সাথেই ডিনার রেডী করে দিল। Continue reading “ডাবলিনের ডায়েরী – ১১ (১৭ ফেব্রুয়ারী ২০০৯)”

ডাবলিনের ডায়েরী – ১১ (১৭ ফেব্রুয়ারী ২০০৯)

ডাবলিনের ডায়েরী – ১০ (২৮ নভেম্বর ২০০৮)

তিন মাসের বেশি হবে আমি ডায়েরী লিখি না। আসলে ব্লগ থেকেই দূরে ছিলাম বেশ কিছু দিন। এখন নিঃসঙ্গ জীবনে কেমন যেন একটা চাপা অস্বস্তি কাজ করে সব সময়। ঠিক বলে বোঝানো যাবে না। পরিবার থেকে অনেক অনেক দূরে, সম্পূর্ন একা। মাস্টার্স প্রায় শেষ কিন্তু পি.এইচ.ডি-এর স্কলারশীপটা এখনও নিশ্চিত নয়। খালুর মৃত্যু এবং মামার রোড এক্সিডেন্ট। সবকিছু যেন এক সাথে চেপে ধরে আছে আমার চারপাশকে। প্রতিনিয়ত কেমন যেন একটা অনুভুতি, আরেকটা খারাপ সংবাদ শোনার ভয়। আসলে এখন যেন কোন ভালো খবর আশাই করতে পারিনা। খবর বলতে এখন সবই যেন খারাপ খবর। তবুও জীবন চলছে, অন্যভাবে বলা যায় চালাতে হয়। Continue reading “ডাবলিনের ডায়েরী – ১০ (২৮ নভেম্বর ২০০৮)”

ডাবলিনের ডায়েরী – ১০ (২৮ নভেম্বর ২০০৮)

ডাবলিনের ডায়েরী – নয় (১৬ অগাস্ট ২০০৮)

গত দুদিন রীতিমত হুটহাট করে বেশ কিছু ঘটনা ঘটে গেলো। অনেকটা মিরাকলের মতই মনে হচ্ছে, যেন হঠাৎ শুন্য থেকে হাতের মুঠোয় একটা বেড়ানোর সুবর্ন-সুযোগ চলে এসেছে। ভণিতা না করে খুলেই বলছি। পরশু বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মেইল চেক করে দেখি আমাদের ইন্টারনাল চেইনে একটা ওয়ার্কশপ কাম সামার স্কুলের ইনভাইটেশন এসেছে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের অলস্টার বিশ্ববিদ্যালয় (ডেরী ক্যাম্পাস) থেকে। প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দেইনি; এরকম বহু আমন্ত্রন প্রতিদিনই আসে। অতএব এটাকে বিশেষ ভাবে দেখার তেমন কোন কারন নেই। কিন্তু মেইলটা দৃষ্টি আকর্ষন করতে বাধ্য হলো সাবজেক্টের কারনে। সেখানে লেখা আছে খুব অল্প কিছু ছাত্রদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফিস মউকুফ করা হবে। আসন যেহেতু সীমিত, যারা আগে আবেদন করবে তারাই সুযোগ পাবে। দ্রুত যোগাযোগের ঠিকানায় চোখ বুলিয়ে নিলাম এবং প্রথম ধাক্কাটা তখনই খেলাম। জনৈক ড. এন এইচ সিদ্দিকী’র সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এই নামটা আমার খুব পরিচিত লাগলো। মনে করার চেষ্টা করলাম নামটা আমি কোথায় দেখেছি। পুরোপুরি মনে না পড়লেও অনুমান করতে সক্ষম হলাম। আমি যখন রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড (এই পোস্টে পরবর্তিতে এই নামটাকে সংক্ষেপে রিপাবলিক লেখা হবে) আসি তখন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড থেকে একজন স্যার আমাকে মেইল করে কনগ্রাচুলেট করেছিলেন। বলাইবাহুল্য তিনি বাংলাদেশী। আমিও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পাল্টা মেইল করেছিলাম। তবে এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল তিনিই ড. এন এইচ সিদ্দিকী। জিমেইলের আর্কাইভ মেইলে সার্চ দেয়ার সাথে সাথে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে গেলো; আমার অনুমান শতভাগ সঠিক। চিন্তাটা তখনই মাথায় আসলো। একবার নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড থেকে ঘুরে আসলে কেমন হয়? রিপাবলিকের আইরিশদেরতো গত নয় মাস দেখলাম, এবার একটু পাশের দেশের আইরিশদের দেখে আসলে মন্দ হয় না। Continue reading “ডাবলিনের ডায়েরী – নয় (১৬ অগাস্ট ২০০৮)”

ডাবলিনের ডায়েরী – নয় (১৬ অগাস্ট ২০০৮)